ঘরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী,নিখোঁজ ফায়ার সার্ভিসকর্মী শফিউল

ঘরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী,নিখোঁজ ফায়ার সার্ভিসকর্মী শফিউল
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডটি সাধারণ অগ্নিকাণ্ড নয়।বিএম কনটেইনার ডিপোতে শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে। যাদের মধ্যে ৮জনই ফায়ার সার্ভিস কর্মী।এছাড়া ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন ফায়ার সার্ভিসকর্মী শফিউল ইসলাম (২৫)। ঘটনার প্রায় তিন দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও ছেলে খোঁজ না পেয়ে তাকে নিহত মানছেন শফিউল পরিবার।চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পোড়া দগ্ধ লাশে হন্যে হয়ে ছেলের মরদেহ খুঁজছেন শফিউলের স্বজনরা। ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের হেডকোয়ার্টার ও সীতাকুণ্ডেও শফিউলকে খুঁজে পেতে অবস্থান করছে তার পরিবারের লোকজন।নিখোঁজ ফায়ার ফাইটার শফিউলের বাড়ি সিরাজগঞ্জে উল্লাপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাগরৌহা গ্রামে। গত বছর শফিউল বিয়ে করেন। শফিউলের স্ত্রী ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরিবারের দুই সন্তানের মধ্যে শফিউল ইসলাম বড় ছিলেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন শফিউল। তিনিই একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান। তাকে হারিয়ে বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম।কুমিরা ফায়ার স্টেশনে ফায়ার ফাইটার হিসেবে কর্মরত ছিলেন শফিউল। ছেলের খোঁজে এ মুহূর্তে ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা হেডকোয়ার্টার অফিসে অবস্থান করছেন শফিউলের বাবা। সোমবার সকালে আব্দুল মান্নান মোবাইল ফোনে জানান, শফিউলের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। এ সময় যদি আমার শফিউলের কোনো কিছু হয়ে যায়, তাহলে আমরা একেবারে নিঃস্ব হয়ে যাব। আমি একজন তাঁতশ্রমিক। বর্তমানে অসুস্থতায় ভুগছি। আমি সন্তাকে ফেরত চাই।স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, বিএম কনটেইনার ডিপোর বিস্ফোরণে সৃষ্ট আগুন নেভাতে শনিবার রাতে যোগ দেয় কুমিরা ফায়ার স্টেশন কর্মীরা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের আটজন কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়াও গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন। তাদের মধ্যে কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মী গাউসুল আজম ও সীতাকুণ্ডু স্টেশনের রবিউলকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছে। গাউসুলের শরীরের ৮০ শতাংশ এবং রবিউলের ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলের আশপাশের অন্তত চার বর্গকিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। ওই বিস্ফোরণ ও আগুন পুড়ে মারা গেছেন ৪৯ জন। তাঁদের মধ্যে ৯ জন ফায়ার সার্ভিসের সদস্য, যাঁরা আগুন নেভাতে ও অন্য মানুষের প্রাণ বাঁচাতে ডিপোতে গিয়েছিলেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আরও রয়েছেন ডিপোর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরিবহনশ্রমিকেরা। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সদস্যসহ দুই শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী। এর মধ্যে পুলিশের এক সদস্যের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।